মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৫ পূর্বাহ্ন
শফিকুল ইসলাম খোকন, বরগুনা॥ আব্দুল করিম, বয়স ৯০ বছর। শরীরের দিকে তাকালেই বোঝা যায় বয়সের ছাপ। দেখা হয় বলেশ্বর নদী সংলগ্ন পদ্মা বেড়িবাঁধে। অমাবস্যার জোয়ারে যখন পদ্মার বাঁধ ভাঙছে তখনও ৯০ বছরের এ বৃদ্ধ নিজের চোখে দেখার জন্য বাঁধে ছুটে আসেন। ভাঙা দেখে আক্ষেপ করে বললেন, ‘মোগো কপালই খারাপ, মোগো জন্মই অইছে ভাঙ্গার জন্য।
আব্দুল করিমের মতো হোসেন গাজী, মো. সুলতানসহ অসংখ্য বৃদ্ধ থাকেন এখানে। বলেশ্বর ও বিষখালী নদী। পাশেই সুন্দরবন। বঙ্গোপসাগরের শাখা বলেশ্বর ও বিষখালী নদী ঘেঁষা পাথরঘাটার পদ্মা গ্রাম। এ গ্রামের পাশেই পদ্মা বেড়িবাঁধ। এ বাঁধের ওপরে এবং ভেতরে রয়েছে অসংখ্য মানুষের বসবাস। এখানে বসবাসকারী সবাই ভূমিহীন।
গত কয়েকদিনে জোয়ারের পানিতে বাঁধ ভাঙার কারণে মানুষের মাঝে যেমন আতঙ্ক বিরাজ করছে তেমনি বসতঘর তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এরইমধ্যে পদ্মা বেড়িবাঁধ প্রায় এক কিলোমিটার ভেঙে গেছে।
৯০ বছরের আব্দুল করিম বাঁধের দক্ষিণ দিকে হাত উঠিয়ে আক্ষেপ করে বলেন, ‘অনেক দূরে মোগো বসতবাড়ি ছিল। ভাঙতে ভাঙতে এহন পর্যন্ত ছয় ভাঙা দেছে। এহন মরতে পড়ছি। আরো কতবার দেখতে অইবে (হবে) জানি না। দেখতে দেখতে মনে হয় মরতে অইবে।তিনি আরো বলেন, ‘এইহান দিয়াই সিডরের বন্যায় আমার ভাতিজা মারা গেছে। বাঁধ ভাইঙ্গাই সিডরে ৫২ জন মারা গিয়েছিল। মোগো কপালে কী আছে জানি না।
৭০ বছরের সুলতান মিয়া বলেন, ভাঙলে মেরামত করে। কিন্তু স্থায়ী কোনো মেরামত করা হয় না। আমাদের কপাল ভাঙে আর ঠিকাদারের পকেট ভরে। প্রতিবারই আমাদের ঘরবাড়িসহ কৃষি ক্ষেত তলিয়ে যায়।
পাথরঘাটার ইউএনও মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ভাঙা বেড়িবাঁধটি ৫০ জন শ্রমিক দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মেরামতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পাঁচ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তালিকা করে তা বিতরণ করা হবে।
Leave a Reply